পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় গুদাম থেকে মাঠপর্যায়ে গেল নষ্ট সিরিঞ্জ

 


মাঠপর্যায়ে নষ্ট সিরিঞ্জ পাঠানো হয়েছিল। ঘটনাটি চেপে যাওয়ার চেষ্টা লক্ষ করা গেছে।


অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় গুদামের অন্যান্য সামগ্রী এভাবে নষ্ট হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উঠেছে। একই সঙ্গে অবহেলা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার কারণে এমনটা হলো কি না, তা খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে।


রাজধানীর মহাখালীতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় গুদাম অবস্থিত। এই গুদামে বিভিন্ন ধরনের বড়ি, কনডম, ইমপ্লান্ট, ইনজেকশন, সিরিঞ্জসহ নানা ধরনের কিট মজুত থাকে। মূলত এই গুদাম থেকেই ঢাকা বিভাগের সব জেলা-উপজেলা পর্যায়ের স্টোরে পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়।


অধিদপ্তরের একটি সূত্র বলছে, গত ২১ আগস্ট মানিকগঞ্জ জেলার একাধিক উপজেলায় কেন্দ্রীয় গুদাম থেকে পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। বিভিন্ন উপজেলার সংশ্লিষ্ট স্টোরকিপার তা বুঝে নেন। উপজেলার কর্মকর্তারা পরে জানতে পারেন, কিছু পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রী নষ্ট।


জেলার অন্তত হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেওয়া নষ্ট সামগ্রী সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। একাধিক সূত্র এই তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।


এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইফুল্লাহিল আজমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি অধিদপ্তরের পরিচালক (লজিস্টিক) মর্জিয়া হকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। মর্জিয়া হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ তাঁকে লিখিতভাবে কিছু জানাননি বা কেউ কোনো অভিযোগও করেননি।’


মোড়ক নষ্ট

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার কর্মকর্তারা প্রয়োজনের সময় কার্টন খুলে দেখেন, অটো ডিসপোজিবল সিরিঞ্জের প্যাকেটগুলো নষ্ট। প্রতিটি সিরিঞ্জের প্যাকেটের ওপরের প্লাস্টিক ছেঁড়া। দেখে মনে হয়, সেগুলো অনেক পুরোনো।


এগুলো কীভাবে নষ্ট হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পর্যায়ের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সম্ভবত বহুদিন গুদামে ফেলে রাখার কারণে সিরিঞ্জের প্যাকেট নষ্ট হয়েছে।


ছবি দেখালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, ইনজেকশনের মাধ্যমে জন্মনিরোধক ব্যবহারে এই সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয়। মূলত পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মীরা এসব সিরিঞ্জ ব্যবহার করেন।


একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, নষ্ট এই সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয়নি। জেলা ও কেন্দ্রীয় গুদামের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়। পরে তা ফেরত নেওয়া হয়।


সিংগাইর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ বি এম শাহিনুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, কিছু সিরিঞ্জ এসেছিল। তবে তা কেন্দ্রীয় গুদাম থেকে আবার ফেরত নিয়ে গেছে। কবে ফেরত নিয়েছে, তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।


উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় গুদামের কর্মকর্তারা সিরিঞ্জ নষ্ট হওয়ার ঘটনা স্বীকার করেছেন। তবে বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা লক্ষ করা গেছে। এমনকি এ বিষয়ে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পর্যন্ত করা হয়নি।


তিন দশকের বেশি সময় ধরে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেনার সময় সিরিঞ্জ দেখে কেনা হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে। কত সিরিঞ্জ নষ্ট হয়েছে, নষ্ট সিরিঞ্জ কেন মাঠপর্যায়ে পাঠানো হলো, তা জানা দরকার। এভাবে অন্যান্য সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে কি না, তা–ও খতিয়ে দেখা দরকার। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’


Related Keyword 

Healthcare news this week

Mental health news

Guardian health news

Global health news this week

Short health articles

Top health news weight loss patch

বাংলাদেশ প্রতিদিন

BBC Bangla

বিবিসি আজকের খবর

অনলাইন পত্রিকা প্রথম আলো

All Bangla Newspaper

আজকের ব্রেকিং নিউজ 24 ঘন্টা

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url